একসময় হোটেলে নোংরা পরিষ্কার করতেন, বর্তমানে তিনি একজন IAS অফিসার। IAS আনসার আহমেদের গল্প আপনার চোখে জল এনে দিতে বাধ্য।ছোট থেকেই দারিদ্রতার শিকার। বহুদিন এমন হয়েছে যে অনাহারে কাটাতে হয়েছে।
হোটেলের খাওয়া বাসন পত্র পরিষ্কার করার পরে যে টাকা জুটেছে, তাই দিয়েই কোনরকমে দিন গুজরান করতে হয়েছে। এসবের মধ্যে ও পড়াশোনা থেকে একবিন্দুও মনোযোগ সরাননি তিনি।
বুঝেছিলেন শিক্ষাই একমাত্র দারিদ্রতার শৃংখল ভাঙার চাবিকাঠি। কঠিন অধ্যাবসায়ের ফলে কঠিন থেকে কঠিনতর পরীক্ষায় পাশ করে বর্তমানে তিনি একজন সফল আইএএস অফিসার। তার নাম আনসার আহমেদ।
মহারাষ্ট্রের একটি ছোট গ্রামে তার জন্ম। এনার বাবা অটো চালাতেন । পরিবারের ছিল বাবা-মা, দুই বোন ,এক ভাই। শুধুমাত্র অটো চালিয়েই এতজনের ভরণপোষণ সম্ভব ছিল না। সংসারের হাল ধরতে তার মা দিনমজুরের কাজ শুরু করেন।
আনসার যখন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়েন তখন তিনি ভেবেছিলেন পরিবারের জন্য কাজ করবেন। স্কুলের শিক্ষকের বারণ করার জন্য তখন তিনি সেই কাজ থেকে বিরত থাকেন। তবে ছোটবেলায় হোটেলের নোংরা পরিস্কার করার কাজ করেছেন তিনি।
Read more:
- UPSC IAS 2022:বাস চালকের মেয়ে আজ IAS অফিসার, অনুপ্রেরণার গল্প
- ১০ বছরে ৬ বার ব্যর্থতা UPSC পরীক্ষায়, তবু যুবককে কুর্নিশ নেটিজেনদের
- Google Job: নদীয়ার এই ছেলেটি দেড় কোটি টাকা বেতনের জীবনের প্রথম চাকরি পেলেন
- ফেল করেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিকে, প্রেমিকার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় আজ তিনি IPS অফিসার !
দশম শ্রেণীতে উঠে কম্পিউটার শেখার কথা ভাবলেও বিপুল পরিমাণ ফি জমা করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তখন একটি হোটেলে অর্ডার নেওয়ার কাজ শুরু করেন। সকাল ৮টা থেকে রাত 11 টা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করতেন। হোটেলে বাসনপত্র পরিষ্কার করা, টেবিল পরিষ্কার করা, মেঝে পরিষ্কার করা, জল ভরা ইত্যাদি কাজ তখন তাকে করতে হতো। এরই মাঝে দুই ঘণ্টার বিরতিতে তিনি খাবার খেতেন এবং উপার্জনের টাকায় কম্পিউটার ক্লাসে যেতেন।
তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার পেছনে একটি ঘটনা আছে। একদিন তিনি বাবার সাথে বিপিএল অফিসে গিয়েছিলেন একটি কাজের জন্য। সেখানে তার বাবার কাজ করে দেবার জন্যে এক কর্মচারী বিপুল পরিমাণে ঘুষ চায়। যখন তিনি জিজ্ঞেস করেন যে ঘুষ কেন দিতে হবে? বাবা তাকে উত্তর দিয়েছিল "ঘুষ না দিলে কিছুই হবে না" একটি উত্তরই যেন বদলে দিয়েছিল আনসার আহমেদের জীবন।
তিনি মনে মনে ঠিক করে এই দুর্নীতিকে তিনি নির্মূল করবেন। তখনই তিনি আই এ এস অফিসার হওয়ার পরিকল্পনা করেন। 2015 সালে প্রথমবারের প্রচেষ্টাতেই তিনি 361 তম স্থান অর্জন করেন। সাফল্যের পেছনে তার ভাই বাবা-মা এবং শিক্ষকদের অবদান অনস্বীকার্য বলে তিনি বারবার বলে এসেছেন।
আইএএস আনসারী আহমেদের গল্প উদ্বুদ্ধ করে বহু ছাত্র-ছাত্রী তথা দেশের বহু পরীক্ষার্থীদের। একজন সামান্য হোটেল কর্মচারী থেকে বর্তমানে একজন আইএএস অফিসার হবার পথে বহু বাধা-বিপত্তি এসেছে তার জীবনে।
তবু মনের একাগ্রতা আর পড়াশোনার প্রতি সঠিক অধ্যবসায় তাকে সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। তার লক্ষ্য সিস্টেমের মধ্যে দুর্নীতি নির্মূল করা।
লেখায়ঃ তন্ময় দেবনাথ
0 মন্তব্যসমূহ
কোনোরকম জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে কমেন্ট করুন....