ভারতের বড়ো পরীক্ষাগুলোর মধ্যে একটি হলো UPSC, যা ক্র্যাক করা প্রায় সব ভারতীয় ছাত্রদেরই স্বপ্ন। কেউ ধনী, দরিদ্র যেমনই হন না কেনো, স্পষ্ট ইংরেজি বলতে পারেন বা না পারেন , সেগুলো বিবেচ্য নয়। স্নাতক স্তরে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ নম্বর থাকলেই এই পরীক্ষায় বসা যায়।
প্রীতি হুডা, বর্তমানে একজন IAS অফিসার। তার কাহিনী সত্যিই আপনাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে। তার একটি বিবৃতিতে তিনি বলেছেন তার রেজাল্ট বেরোনোর সময়ের কথা। "যখন UPSC রেজাল্ট এলো, আমি আমার বাবাকে ফোন করলাম। সেই সময় তিনি বাস চালাচ্ছিলেন। রেজাল্ট শোনার পর আমার বাবা আমাকে বললেন, 'শাবাশ বেটা' !"
IAS প্রীতি হুডার জন্ম হরিয়ানা রাজ্যে। বাবা দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনে বাস চালক। প্রীতি ছোটো থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তিনিই একমাত্র, যে তার পরিবারের নারীদের মধ্যে প্রথম এতদিন পড়াশোনা করছেন এবং অবিবাহিত আছেন।
মাধ্যমিকে ৭৭% এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৮৭% নম্বর পেয়ে পাশ করার পর হিন্দি নিয়ে স্নাতক কোর্সে ভর্তি হন এবং ৭৬% নম্বর নিয়ে স্নাতক সম্পূর্ন করেন। UPSC CSE তে হিন্দি হিসাবে তিনি ঐচ্ছিক বিষয় বেছে নেন এবং M PHIL করার জন্য JNU তে ভর্তি হন। তখন থেকেই উনি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
প্রীতির বাবার স্বপ্ন ছিল তাকে একজন IAS অফিসার হিসাবে দেখা। কিন্তু প্রথমবারের পরীক্ষায় তিনি সফল হতে পারেননি। শেষে ২০১৭ তে তিনি IAS অফিসার হিসাবে ফিরে আসেন, স্বপ্নপূরণ হয় তার বাবার।
প্রীতি হুডার বাবা একজন বাসচালক হলেও আর্থিক সমস্যাকে তিনি কখনোই তার সন্তানদের ভবিষ্যতের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে দেননি। প্রীতির পরিবার এমনই একটি পরিবার, যেখানে মেয়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ব্যতিক্রমী ছিলেন, এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, প্রার্থীদের উচিৎ পরীক্ষার প্রস্তুতির দিনগুলোতে শান্ত থাকতে হবে, নিজেদের বিনোদনের উপায় খুঁজে বের করতে হবে এবং সেগুলি যেনো লক্ষ্যের পথে বাঁধা না হয়ে দাঁড়ায়।
উনি আরো বলেন, ইংরেজি জানতেই হবে এমন কোনো বিষয় নেই, কেউ যদি হিন্দিকে তার পরীক্ষার মাধ্যম হিসাবে নিতে চান, তাহলে হিন্দিতে পরীক্ষা দিয়েও কেউ সাফল্য অর্জন করতে পারবে।
লেখায়ঃ তন্ময় দেবনাথ
0 মন্তব্যসমূহ
কোনোরকম জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে কমেন্ট করুন....